সিঙ্গাপুরে প্রতারণার অভিযোগে তিন বাংলাদেশীর ১২ মাসের জেল
সিঙ্গাপুরে প্রতারণার অভিযোগে তিন বাংলাদেশীর ১২ মাসের জেল
চার ব্যক্তির একটি দল গত বছর একজন বাংলাদেশী নাগরিকের অন্যের রেমিট্যান্সের অর্থে প্রতারণা করে নিয়েছিলো। যার মধ্যে একজন অপরাধী তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)কর্মকর্তার পরিচয় দিয়েছিলো।
এই Scam কেলেঙ্কারীটি সফল হয়েছিল। গ্রুপটি নগদ এবং গহনা হিসাবে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার ডলার প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছিলো।
তবে শেষ পর্যন্ত তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিনজন- ইসলাম মোঃ নুরুল( ৩৩) সোফিয়ান আবু ( ৩৮)এবং বাবুল মো: (৩৫) ।
তাদের প্রত্যেককে শুক্রবার (৫ জুন) আদালত কর্তৃক ১২ মাসের হাজতবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে৷ এই তিনজন বাংলাদেশী গত মাসে প্রতারণার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছিল।
শুক্রবার তাদের প্রত্যেককে সাজা দেওয়ার সময় জেলা জজ জাজবেনদার কৌর আরও একটি প্রতারণামূলক সম্পর্কিত অভিযোগ বিবেচনা করেছিলেন।
গ্রুপের শেষ সদস্য সিঙ্গাপুরিয়ান নাগরিক ২৯ বছর বয়সী অ্যাং ঝাও হংয়ের বিরুদ্ধে মামলা এখনও বিচারাধীন।
গত বছরের নভেম্বরে বাবুল জানতে পেরেছিল যে একজন বাংলাদেশী, যিনি কেবল সুমন (৪৫) নামে পরিচিত। তিনি রেমিট্যান্সের অর্থ সংগ্রহের সাথে জড়িত ছিলেন এবং প্রচুর অর্থ তার ঘরে রেখেছিলেন।
রেমিট্যান্সের অর্থ বাংলাদেশিদের যাদের আদালতে নথিগুলিতে তাদের চিহ্নিত করা হয়নি। তাদের নিজ দেশে তাদের পরিবারের নিকট এই অর্থ স্থানান্তরিত করার কথা ছিলো।
বাবুল এই তথ্য ইসলাম ও সোফিয়ানের সাথে শেয়ার করেছিলো। অ্যাং ঝাও হং পরবর্তীকালে তাদের কাছে এই সম্পর্কে জানতে পেরেছিলো৷
এই দলটি তখন সুমনের কাছ থেকে রেমিট্যান্সের টাকা প্রতারণার পরিকল্পনা করেছিল।পরে বাবুল সেই ঘরটি চিহ্নিত করে যেখানে সুমন অর্থ রাখে।জায়গাটি ছিলো রবার্টস লেনের জামান সেন্টারের চতুর্থ তলায়৷
গত বছর ১১ নভেম্বর সকাল ১২.৩০ টায়অ্যাং ঝাও হং ঘরে প্রবেশ করে যেখানে সুমন ও তার বন্ধুরা ছিলো। আদালতের নথিতে সুমনের বন্ধুরা কে ছিল তা জানানো হয়নি।
সোফিয়ান ঘরের বাইরের বাসা দেখার ভান করছিল। ইসলাম ও বাবুল জামান সেন্টারের বাইরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
নিজেকে সিআইডি পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অ্যাং ঝাও হং সুমন এবং তার বন্ধুদের জানিয়েছিল যে পুলিশ আসছে এবং তারা নড়বে না।
এরপরে তিনি সুমনকে ঘরে নিরাপদ বাক্সগুলি খুলতে আদেশ করলেন।বাক্সগুলির মধ্যে একটি ব্যাগ ছিল ১ লক্ষ ১৮ হাজার ডলার ক্যাশ এবং ৩৫০ গ্রাম স্বর্ন যার মূল্য ২১৮৭৫ ডলার। অ্যাং ঝাও হং রুম থেকে বের হবার আগে নগদ ডলার ও স্বর্নলংকার সাথে করে নিয়ে যায়৷
চারজন সহযোগী জামান সেন্টারে পুনরায় একত্রিত হয়ে একটি ভাড়া করা ভ্যানে রওনা হন।বাবুল চলে যাওয়ার পরে, গ্রুপের অবশিষ্ট সদস্যরা অ্যাং ঝাও হংয়ের বাসায় চলে যান। যেখানে অ্যাং ঝাও হং ইসলাম এবং সোফিয়ানকে তাদের সহায়তার করার জন্য গহনা দিয়েছিলেন।
তারপরে ইসলাম গহনাটি ৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে বন্ধক দেয় এবং সে অর্থ সে তার ভাইকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।সমস্ত গহনা পাশাপাশি ৮৮৭৭০ ডলার নগদ ক্যাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
বাবুলের আইনজীবী মিঃ এ রেভি শঙ্কর আদালতে বাবুলের পক্ষে বলেছিলেন যে, তার মক্কেল সুমনকে প্রতারণা করার ক্ষেত্রে সীমিত ভূমিকা পালন করেছে এবং এর থেকে তার কোনও লাভ হয়নি।
জেলা জজ কৌর দ্বিমত পোষণ করে বলেন, এই তিনজনের নির্দিষ্ট ভূমিকা ছিল এবং তিনি তাদের অপরাধবোধকে একইরকম বলে মনে করেন৷
তাদের অপরাধের জন্য, তাদের প্রত্যেককে ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা করা যেতে পারে।