সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক বাংলাদেশীর সাথে কথোপকথন।

0
সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক বাংলাদেশীর সাথে কথোপকথন। 

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশীর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজারের উপরে। তবে আশার কথা হলো এই পর্যন্ত অনেকেই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। সুস্থ হবার পথে আছেন অনেকেই৷ সিঙ্গাপুরে করোনায় আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশী এখন খুবই ভালো আছেন৷ বর্তমানে তিনি আইসোলেশনে আছেন৷ 
গতকাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক বাংলাদেশী ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়৷ 
তার নাম সুজন ইসলাম যিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর খুবই দূর্বল হয়ে পড়েন৷ তাকে ২৪ ঘন্টা আইসিইউতে রাখা হয়েছিলো।
এরপর ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার শারীরিক অবস্থা উন্নতি হলে তাকে হাসপাতাল থেকে এক্সপোতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। 
তার সাথে পরিচয় হবার পর জানতে পারি তার গ্রামে বাড়ি কুমিল্লা দাউদকান্দি। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়৷ বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের বড় ছেলে হিসেবে তিনি সংসারের দায়িত্ব নেন। পরিবারের সবার সুখের জন্য ২০১৪ সালে পাড়ি জমান সিঙ্গাপুরে। 
বর্তমানে ইউনি কোট প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত আছেন। সিঙ্গাপুরে ওয়েস্ট লাইট তোগাান ডরমিটরি থাকেন৷ 
তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ১৩ মে আমার করোনাভাইরাস টেস্ট করা হলে রেজাল্ট পজিটিভ হয় ৷ তখন আমার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। তাই তারা আমাকে একদিন আইসিইউতে রাখে। শরীরের অবস্থা ভালো হলে আইসিইউ থেকে আমাকে হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসা সেবা দেয়৷ আলহামদুলিল্লাহ এখন আমার শারীরিক অবস্থা খুবই ভালো। 
ঈদ উপলক্ষে কিছু কিছু অভিবাসীকে সিঙ্গাপুর সরকারের পক্ষ থেকে উপহার দেওয়া হয়েছে ৷ তিনি উপহার পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর সরকার আমাকে ঈদের উপহার সার্ট, প্যান্ট ও জুতা দিয়েছে। তাছাড়া একজন ব্যাচেলরের যা যা লাগে তার প্রয়োজনীয় সবই দিয়েছে৷ 
সিঙ্গাপুর সরকার যা করছে আমার জন্য তা শুধু ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করা যাবে না। সারাজীবন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব৷ মন থেকে তাদের জন্য দোয়া করব৷ 
তাছাড়া ঈদের দিন আমাদের ঈদের নামাজ আদায় করার সুব্যবস্থা করে দিয়েছে। অন্য দেশে হলে তা সম্ভব হতো কিনা জানি না। 
হাসপাতালে তিনি কেমন চিকিৎসা সেবা পেলেন এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এই ব্যাপারে কি বলব ভাই। তাদের কাছে এমন চিকিৎসা সেবা পাবো তা কোনদিন ভাবতেও পারিনি। সিঙ্গাপুর সরকার, ডাক্তার ও নার্স আমাকে তাদের ছেলের মতো দেখেছেন। আমি তাদের এই ভালোবাসার প্রতিদান কোন দিন শোধ করতে পারব না। 
সিঙ্গাপুর সরকার বিনামূল্যে করোনায় আক্রান্ত অভিবাসীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে৷ এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। তার চিকিৎসা ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সুজন বলে, ভাই আমার চিকিৎসার জন্য আনুমানিক প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। যা সিঙ্গাপুর সরকার বহন করেছে । আমার পক্ষে এত টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো সম্ভব ছিলো না। 
সিঙ্গাপুর সরকারের আন্তরিকতা, ডাক্তার,নার্সদের আন্তরিক চিকিৎসা ও ভালবাসায় আজ আমি সুস্থ হবার পথে। 
আমার পরিবারের সবাই এদেশের সরকারের জন্য সবসময় প্রার্থনা করে৷ 
শুধু সুজন সরকারই নয় তারমতো যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে৷ সিঙ্গাপুর সরকার এদেশের স্থানীয় জনগনের মতো আন্তরিকতার সহিত চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। সিঙ্গাপুর সরকারের এমন মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই৷ 
ওমর ফারুকী শিপন। 
সিঙ্গাপুর প্রবাসী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *